মায়ানমার আয়তন-মায়ানমার রাজধানী
বর্তমান বিশ্বে যে কয়েকটি আলোচিত সমালোচিত দেশ আছে তার মধ্যে মায়ানমার অন্যতম সামরিক শাসন রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই দেশটি সবার মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে মায়ানমার অনেক আগে থেকেই আলোচিত কারণ।
মায়ানমারে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহকে নির্বাচনে দেওয়া হয়েছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং প্রাকৃতিক জন্য দেশটির সর্বদাই বিখ্যাত ছিল আজকের পোস্টে আলোচনা করব মায়ানমার সম্পর্কে যাবতীয় দেখতে থাকুন সম্পুর্ন পোস্ট-
কুয়েতের টাকার মান বেশি কেন এবং কুয়েতের টাকার নাম কি এবং কুয়েতের টাকার ছবি জানতে ক্লিক করুন
আমাজন বন কোথায় অবস্থিত,আমাজন বনের আয়তন,অ্যামাজন জঙ্গল জানতে ক্লিক করুন
মায়ানমার আয়তন-মায়ানমার রাজধানী
মায়ানমার আয়তন ৬৭,৬৫৫২ বর্গ কিলোমিটার ।মায়ানমারের উত্তর পশ্চিম দিকে অবস্থিত ভারত এবং বাংলাদেশ উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত চিনিন পূর্বদিকে অবস্থিত লাওয়াস দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত থাইল্যান্ড দক্ষিণ দিকে অবস্থিত আনদাবান শিব এবং দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থিত বঙ্গোপসাগর মায়ানমার আয়তন প্রায় ছয় লাখ 76 হাজার 578 স্কয়ার কিলোমিটার ।
সাউথইস্ট এশিয়া মায়ানমার আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় দেশ এবং সমগ্র এশিয়ার মধ্যে আয়তনের দিক থেকে দশম স্থান অধিকার করেছে।
প্রতি স্কয়ার কিলোমিটার এখানে জনঘনত্ব মাত্র 76 জন । ভৌগলিক অবস্থান এবং রাজনৈতিক দিক থেকে মায়ানমার এর গুরুত্ব অপরিসীম
মায়ানমার রাজধানী
মায়ানমারের রাজধানীর নাম Naypyidaw এবং বড় শহরের নাম ইয়াংগুন। মায়ানমারের জাতীয় মুদ্রার নাম kyat .
মায়ানমারের জনসংখ্যা
মায়ানমারের জনসংখ্যা৫,৩০,৮২,৮৫৫ জন ।2017 সালের হিসাব অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় 5 কোটি 30 লক্ষ 82 হাজার 855 ।প্রতি স্কয়ার কিলোমিটার এখানে জনঘনত্ব মাত্র 76 জন ।
মায়ানমারের ধর্ম এবং জাতি গোষ্ঠ
মায়ানমারের বুদ্ধ ধর্ম হল বৌদ্ধধর্ম কারণ এই দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় 88% মানুষই বৌদ্ধধর্মাবলম্বী সেখানে খ্রিস্টান ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষের দেখা যায় 948 সালের 4 জানুয়ারি মায়ানমার ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভ করেন।
তবে তখন পর্যন্ত দেশটির নাম্বার হিসেবে পরিচিত ছিল এরপর1989 সালের 18 জুন বার্মা নাম পরিবর্তন মায়ানমার অবশেষে 2000 সালের 30 মার্চ মায়ানমার প্রেসিডেন্টের সরকারি সূচনা হয়।মায়ানমার মূলত ইউনিটারি অ্যাসেম্বলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কনস্টিটিউশনাল রিপাবলিক সরকার গঠিত হয় ।
মায়ানমারের পার্লামেন্টের দাম অ্যাসেম্বলি অফ দ্য ইউনিয়ন ।যা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের নাম হাউস অফ নেশনালিটি এবং নিম্নকক্ষের নাম হাউস অফ রেপ্রেসেন্টাতিভস ।
মায়ানমারে কয়েকটি জাতি দেখা যায় তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে বার্মা যা ৬৮ শতাংশ। এছাড়া স্নান ,কারেইন, রাখাইন,চাইনিজ ,ইন্ডিয়ান, মন ইত্যাদি বিভিন্ন গোষ্ঠী দেখা যায়। 135 নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে ।
মায়ানমারের ভাষা
মায়ানমার অফিশিয়াল ভাষাগুলো পারমিট কিন্তু এই ভাষাটি ছাড়াও এখানে বেশ কয়েকটি ভাষাকে অফিশিয়ালি স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভাষা হল কাচিন ,কারেন ,চিন, মন ,রাখাইন ইত্যাদি ।
মায়ানমার
মায়ানমার নাম বর্তমানে মায়ানমার নামে পরিচিত হলেও এর প্রাচীন নাম ছিল বার্মা ।কয়েক বছর আগেও দেশটিকে বার্মা নামে ডাকা হতো অবশ্য তারও আগে এই দেশ ব্রহ্মদেশ নামে পরিচিত ছিল যার অর্থ হচ্ছে ঈশ্বরের দেশ।
প্রাচীন বার্মিজ ভাষার দুটি শব্দ মায়ান এবং মার নিয়ে মায়ানমার শব্দটি গঠিত। মায়ান শব্দের অর্থ প্রথম এবং মার শব্দের অর্থ শক্তিশালী সুতরাং মায়ানমার শব্দের অর্থ প্রথম শক্তিশালী।যার অন্তর্নিহিত অর্থ প্রথম শক্তিশালী রাষ্ট্র বা অদ্বিতীয় শক্তিশালী জাতি।
মায়ানমার সরকারিভাবে রিপাবলিক অব দ্য ইউনিয়ন অফ মায়ানমার নামে পরিচিত এখানে 135 নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে তার মধ্যে বার্মিজ জনগোষ্ঠী বৃহত্তম মায়ানমারের আয়তন 6 লক্ষ 76 হাজার 852 বর্গকিলোমিটার এবং এর জনসংখ্যা প্রায় 5 কোটি 50 লক্ষ।
মায়ানমারে দর্শনীয় স্থান
মায়ানমারের দর্শনীয় স্থান অনেক আছে কোনটির বিখ্যাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য তেমনি কোন ধর্মীয় কারনে বিখ্যাত । এমনি একটি স্থান হল ছয়ডাগন প্যাগডা। এই প্রাগটাটি দুইটি কারণে জনপ্রিয় এক এই প্যাগডাটি সম্পূর্ন সোনার পাতায় মোড়া ।
দ্বিতীয় হচ্ছে এই প্যাগোডা টিতে প্রায় 4 হাজার 500 টি হিরে বসানো রয়েছে যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হিরে টি হলো ৭২ ক্যারাটের। দই ধর্মীয় কারণে এই প্যাগোডার এর গুরুত্ব অপরিসীম
এখানকার স্থানীয়দের মতে আজ থেকে প্রায় 2500 বছর আগে এখানকার ব্যবসায়ী গৌতম বুদ্ধের সাথে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন তারা গৌতম বুদ্ধের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় গৌতম বুদ্ধের চুলের আটটি গোছা সঙ্গে ছিলেন বর্তমানে এই আটটি চুলের গোছা মন্দিরে সযত্নে রাখা আছে ।
মায়ানমারে রাস্তাঘাটে দোকানে বাজারে এমন অনেক মহিলাকে আপনি দেখতে পাবেন । যাদের গালে ঠিক চন্দেনের প্রলেপ মত একটি পেস্ট লাগানো রয়েছে। আসলে এই পেজটিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় থানাকা ।
এই পেস্টটির প্রচলন মায়ানমারে প্রায় 2 হাজার বছর থেকে বেশি সময় ধরে চলে আসছে বার্মিজ মহিলারা এই পেস্টটি কয়েকটি নির্বাচিত গাছের ছাল থেকে তৈরি করে ।তাদের বিশ্বাস এই পেস্টটি যেমন তাদের মুখকে উজ্জ্বল মসৃণ ও সুন্দর করে তুলবে ঠিক সূর্যে ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে তাদের ত্বককে রক্ষা করে ।
জ্যোতিষ চর্চা মায়ানমারের অন্যতম একটি জনপ্রিয় পেসা মায়ানমারের মানুষ ভাগ্যকে খুবই মান্যতা দেয়া হয় এবং এর ফলে এখানে জ্যোতিষীদের রমরমা খুব বেশি এখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বারোটি যোডিয়াক সাইন এর উপর নির্ভর করেই ভাগ্য দেখা হয় তবে 27 টিরুনাল ম্যানশন এবং আরটি উইক সাইকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয় ।
মায়ানমারের জাতীয় খেলার নাম হলো চিংলং এই খেলাটিতে 6 জন প্লেয়ার অংশগ্রহণ করেন এখানে প্রতিটি প্লেয়ারের কাজ হলো পায়ে করে বলটিকে জাগলিং করোনো। এবং প্লেয়ার কে দেওয়া। মনে করা হয় প্রায় দেরহাজার বছর আগের মায়ানমারের রাজরবারে এই খেলাটির সূচনা হয়েছে ।
মায়ানমারের কুসংস্কার
এই দেশে এখনও অনেক প্রাচীন বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে যেমন গর্ভবতী নারীদের নিয়ে রয়েছে নানা কুসংস্কার মায়ানমারের কোন গর্ভবতী নারীর কলা খেতে পারেনা তাদের বিশ্বাস কলা খেলে শিশু খুব বড় হয়ে যাবে।
মায়নমারে মরিচ খাওয়া নিষিদ্ধ মরিচ খেলে শিশুর চুল উঠে না বলে বিশ্বাস করে মায়ানমারের লোকজন গর্ভবতী কোন নারী বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে পারে না আবার কারও মৃত্যু হলে সেখানেও যাওয়া নিষেধ।
শিশুরাও কুসংস্কারমুক্ত নয় কেউ জন্ম নিলে সাতদিন না হওয়া পর্যন্ত তার নাম রাখা নিষেধ শিশুদের প্রায় প্রত্যেকের গলায় বা হাতে পবিত্র সুতা বেঁধে দেয় না হলে খারাপ আত্মা ক্ষতি করবে বলে মনে করা হয়।
চুলকাটানিয়ে ও মায়ানমারের অধিবাসীদের মধ্যে রয়েছে নানা কুসংস্কার এখানে সোমবার শুক্রবার ও জন্মদিনে কেউ চুল কাটে না মায়ানমারের ।
মানুষের কাছে সুপারি অত্যন্ত প্রিয় দেশের লোকেরা সব সময় সুাপারি চিবিয়ে থাকে মাজার বেপার হচ্ছে স্থানীয় মায়ানমার বাসি হোটেল-রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মুখ দিয়ে চুমু খাওয়ার শব্দ করে ।
আবার তারা কাউকে কোন কিছু দেওয়ার সময় বিশেষ করে টাকা প্রদানের সময় বাম হাত দিয়ে ডান হাতের বাহু স্পর্শ করে এটি তাদের দেশে শোভনীয় প্রথা।
তবে খেলাধুলার ব্যাপারে তারা বেশ নিষ্ঠুর এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে বক্সিং তবে সারা পৃথিবীতে প্রচলিত নিয়মের চেয়ে এর রিতি নিতি বিভিন্ন এবং খুবই নিসংস।কক্সিং এর মধ্যে যিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রথম রক্তপাত ঘটাতে পারে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় ।
মায়ানমার ব্রিটিশ আমলের দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ধনী দেশ ছিল বহু মূল্যবান পাথর তেল প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য বহু খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চল তখন থেকেই ধন-সম্পদের এগিয়ে ছিল।
তবে দীর্ঘসময়ের দেশটিতে সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতির কারণে দরিদ্র হয়ে পড়ে মায়ানমারের ক্রেডিট কার্ড এর প্রচলন নেই বললেই চলে তাই মায়ানমার ভ্রমণ করতে হলে প্রত্যেকটি নগদ অর্থ সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
ভ্রমণের জন্য মায়ানমার একটি আকর্ষণীয় স্থান এর সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুন 2006 সাল পর্যন্ত ইয়াঙ্গুন মায়ানমারের রাজধানী ছিল ইয়াঙ্গুনের প্রধান আকর্ষণ বিশ্ব বিখ্যাত সওদাগর প্যাগোডা।
প্যাগোডা উচ্চতা 99 রিটার ইয়াঙ্গুনের আরেক আকর্ষণ শিয়া মসজিদ বিংশ শতকের শুরুর দিকে ইরান থেকে যাওয়া অভিবাসীরা ইয়াঙ্গুনে এই মসজিদটি গড়ে তুলেন এছাড়াও ব্রিটিশ আমলের বহু পুরনো বিল্ডিং মহাপ্রভুর গুহা ।
70 মিটার দীর্ঘ সাহিত্য গৌতম বুদ্ধের মূর্তি মহাজাগতিক প্যাগডা মুগ্ধ হন পর্যটকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আরেক ভান্ডার হচ্ছে রাজাদের শহর বুগ 14 থেকে 16 শতাব্দীতে মন রাজাদের রাজধানী ছিল এই শহরে শহরে ছড়িয়ে রয়েছে আকর্ষণীয় বৌদ্ধবিহার ।