মরিশাস দেশ কোথায়-মরিশাস দেশ পরিচিতি
আসসালামু আলাইকুম আজকে আলোচনা করব মরিশাস কোথায় অবস্থিত এবং আরো আলোচনা করব মরিশাস দেশের পিরিতিতি এবংমরিশাস এর সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য দেয়া থাকবে আশা করি এই পোস্ট পড়ে আপনারা মরিশাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন-Mauritius
অন্য বিষয়
কুয়েতের টাকার মান বেশি কেন এবং কুয়েতের টাকার নাম কি এবং কুয়েতের টাকার ছবি জানতে ক্লিক করুন
মোবাইল কতদিন ব্যবহার হয়েছে জানতে ক্লিক করুন
এক মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে টাকা পাঠানোর নিয়ম জানতে ক্লিক করুন
যুক্তরাজ্য কোন দেশ-ব্রিটেন কোন দেশ-অয়েসল কোন দেশ-স্কটল্যান্ড কোন দেশ জানতে ক্লিক করুন
মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
মরিশাস দেশ কোথায়-মরিশাস দেশ পরিচিতি
বহুজাতিক বহুভাষা এবং বহুসংস্কৃতির দেশ মরিশাস ।অতিতে ওলন্দাজ ফরাসি এবং ব্রিটিশরা এই দ্বীপে জনবসতি গড়ে তুলেছেন ভারত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্র অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত আফ্রিকা মহাদেশের অধীনে থাকলেও মরিশাস একটুকরো ভারতীয় ।
মরিসিয়া সাথেল ভারতের সম্পর্ক
দ্বিপটির সাদা বালি এবং নিল সাগরের সাথে মিশে আছে ভারতীয় শিল্প সংস্কৃতি খাদ্দমভ্যাস এবং ধর্মীয় আচার বিশ্বাস ।
সারাবিশ্বের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে মরিশাস পর্যটনের স্বর্গ কিভাবে কে কি অসাধারণ সুন্দর ছোট্ট একটি দ্বীপ দেশ মরিশাস সম্পর্কে ম্পর্কে নিম্নে আরো জানুন-
মরিশাস দেশ পরিচিতি
ধারণা করা হয় দশম শতকে আরব বণিকরা সর্বপ্রথম এই দ্বীপটি সম্পর্কে জানতে পারে। তারা এই দ্বীপকে বলতো দিনা আরবি। এরপর ষোল শতকের শুরুর দিকে পর্তুগিজ দিপটিতে ভ্রমণ করলে এখানে বসতি স্থাপন করেনি ।১৫৫৮ সালের ডাচরা ওলন্দাজরা এই দ্বীপের দখল নেয় এবং তারাই এর নামকরণ করে মরিশাস।
১৬৩৮ সালের পর থেকে বেশ কয়েকবার ডাচরা এই দ্বীপে স্থায়ী বসতি গড়ে তুলতে চেষ্টা করলেও জলদস্যুদের কারণে তা সম্ভব হয়নি ।তবে ওলন্দাজদের আগে এই দ্বীপে কোন মানব বসতি ছিল না ১৭২১ ফ্রেঞ্চ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বিপ টি গঠন করে এবং এর নামকরণ করে আইডি ফ্রান্স।
1900 ত্বকের শুরুর দিকে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর 1810 সালে ব্রিটিশরা দীপ্তি দখল করে নেয় এরপর দীর্ঘ 150 বছরের বেশি সময় মরিশাসে ব্রিটিশদের কর্তৃত্ব বজায় থাকে ।অবশেষে 968 সালের 12 ই মার্চ দেশটির স্বাধীনতা অর্জন করে মরিশাস ভারত মহাসাগরের মধ্যে থাকা মাসকারেনেস অন্তর্ভুক্ত দেশ ।
মরিসাস দ্বীপের সৃষ্টি
এই দ্বীপ মালার দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপের অবস্থিত মাসকারেনহাস দ্বীপ মালার সবচেয়ে বড় দ্বীপটির নাম লা ইউনিয়ন মরিশাসের পার্শ্ববর্তী এই দ্বীপটি এখনো ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ধারণা করা হয় 80 লক্ষ বছর আগে ভারত মহাসাগরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে মরিশাস দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে ।
মরিসাস এর আয়তন
মরিসাস এর আয়তন প্রায় 2040 বর্গ কিলোমিটার ।দ্বাপরির দৈর্ঘ্য প্রায় 56 কিলোমিটার এবং প্রস্থ প্রায় 45 কিলোমিটার এতই ছোট যে বাংলাদেশের তুলনায় 71 গুগোল ভারত মহাসাগর এর মাঝে অবস্থিত হলেও ভৌগলিকনৈকট্য কারণে মরিসাশকে আফ্রিকা মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।
আফ্রিকা মহাদেশের উন্নত দেশ
আফ্রিকা মহাদেশের কোন দেশ হচ্ছে মরিসাস। একইসাথে আফ্রিকার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ মরিশাস । মরিসাসের এর জনসংখ্যা প্রায় 13 লক্ষ। মরিশাসের রাজধানী এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর পোর্ট লুইস।
মরিশাস এর রাজধানীর নাম
মরিশাস এর রাজধানীর নাম পোর্ট লুইস । পোর্ট লুইস সবচে জনসংখ্যা বহুল দেশ।এই শহরে প্রায় দেড় লক্ষ লোক বসবাস করে ।
মরিশাসের বসতি
বিভিন্ন সময়ে বহু দেশ থেকে আসা লোকজন এই দ্বিপে বসতি গড়েছে। ফলে এখানকার ভাষা ও সংস্কৃতি ও বহু বৈচিত্র দেখা যায়। তবে মরিশাসের ধর্ম খাদ্যাভ্যাস এবং শিল্পকলায় ভারতবর্ষের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে কারণ এই দ্বীপের তিন ভাগের দুই ভাগ লোকই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ।তাদেরকে ইন্দো -মরিশানস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
মরিসাশের ভাষা
মরিসাশের অধিকাংশ ভাষায় ভারতীয় ভাষা ।মরিশাসের কথ্য ভাষা ফরাসি এবং দাপ্তরিক ভাষা ইংরেজি হলেও অন্যান্য প্রচলিত ভাষাগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোজপুরি, তামিল, হিন্দি, মারাঠি ,উর্দু, তেঘরিয়া,লেলেগু এবং চিনা মান্দারিন।
এই সকল ভাষার শব্দ দিয়ে তৈরি আরেকটি ভাষা হল মরিশিয়ান ক্রেওল। ইউরোপিয়ান ভারতীয় আফ্রিকান এবং চাইনিজ লোক জন মিলে এই ভাষা তৈরি করেছেন তবে পরিবারের ভেতরে তারা নিজেদের পূর্বপুরুষের ভাষায় কথা বলে।
মরিশাসের ধর্ম
মরিশাসের প্রধান ধর্ম হিন্দু দেশটির প্রায় অর্ধেক লোক হিন্দু ধর্মের অনুসারী। রাখি বন্ধন, দোলযাত্রা, গণেশ চতুর্থী, শিবরাত্রি ,দীপাবলীর মত উৎসবগুলো এখানে উদযাপন করা হয়। হিন্দু ধর্মের প্রায় সকল উৎসবে মরিশাসে সরকারি ছুটি থাকে এছাড়া দ্বীপটিতে খ্রিস্টান ও মুসলিম অধিবাসী রয়েছেন ।নিজেদের ধর্ম অনুযায়ী বড়দিন এবং ঈদ উদযাপন করে।
ব্রিটিশ শাসনাম মরিশাস-এবং অভিবাসন
ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনামলে এই অঞ্চল থেকে প্রচুর চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক নিয়ে যাওয়া হয় ততদিনে দাসপ্রথা বিলুপ্ত হওয়ার কারণে ব্রিটিশরা এক ধরনের চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করে ।
বিহার উত্তর প্রদেশ তামিল-তেলেগু মারাঠি এবং উড়িষ্যা থেকে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে এখানে দ্বীপান্তরিত হয় পরবর্তীতে তাদের বংশধরদের মধ্যে থেকেই অনেকে ব্রিটিশদের দ্বারা পুলিশসহ অন্যান্য সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পায় ।গুজরাট এবং সিন্ধু প্রদেশের বহুগুণী এই অঞ্চলে অভিবাসন গ্রহণ করে।
মরিশাসের অর্থনীতি -সরকার
বর্তমানের মরিশাসের রাজনীতি এবং অর্থনীতি ইন্দো মরিসিয়া রায নিয়ন্ত্রণ করে। শুধুমাত্র একজন রাষ্ট্রপতি আর একজন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া প্রতিটি মরিশাসের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ জগন্নাথ এবং রাষ্ট্রপতি পৃথ্বীরাজ সিং তার ব্যতিক্রম নয় ।
মরিশাস সৃষ্টি
আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট মরিশাস। এই দ্বীপটি চারদিকে প্রবাল প্রাচীর দিয়ে ঘেরা দ্বীপ এর উত্তর দিকটা সমতল কেন্দ্রের দিকে অনেকটা মালভূমির মত ।মরিশাস এর বাইরে আরও বেশকিছু দ্বীপ রয়েছে রড্রিগেজ দ্বীপ এবং আগালেগা দ্বীপ সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া মরিশাস দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি করলেও বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশদের সাথে দ্বন্দ্ব রয়েছে বহু আগে থেকেই মরিশাসের প্রচুর গাছপালা কেটে চাষাবাদ শুরু হয়েছে দেশটির প্রায় অর্ধেকের বেশি জমি আবাদি।
প্রধান ফসল মরিশাস
মরিশাস দেশটির প্রায় অর্ধেকের বেশি জমি আবাদি । এর প্রায় পুরোটা জুড়ে চাষ করা হয় ।মরিশাসের বেশিরভাগ অভিবাসী শ্রমিকদের কে এখানে আখ চাষ করার জন্য আনা হয়েছিল।মরিশাসের প্রধান রপ্তানি ফসল আখ।
মরিশাসের প্রাণী
মরিশাসের প্রাণীকুলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাম্বার হরিণ এবং ডোডো প্রানী দুটির জাতীয় প্রতীকে থাকলেও ডোডো সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ডোডো ভূমিতে বিচরণ করা এক ধরনের পাখি এরা উঠতে পারতোনা পাখিগুলোর ওজন ছিল প্রায় 23 কেজি।
বিভিন্ন দেশের নাবিক এবং দিতে আসা অভিবাসীরা মাংসের চাহিদা পূরণ করতে ডোডো স্বীকার করেছে এছাড়া দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে পাখিটির সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
মরিশাসে জলপ্রপাত -ঝর্না
মরিশাসে অনেক জলপ্রপাত আছে । দ্বিপের দক্ষিণ-পশ্চিমে সবচেয়ে বেশি ঝর্ণা রয়েছে ।এমনকি এখানে পানির নিচেও ঝরনা দেখা যায় মরিশাসের এই জায়গাটি আন্ডার ওয়াটার ওয়াটার ফল হিসেবে পরিচিত হলেও এটি এক ধরনের অপটিক্যাল ইলিউশন বা দৃষ্টি ভ্রম ।
পানির নিচে বালিশ স্তর ধীরে ধীরে ঢাল বরাবর সমুদ্রের গভীরে নেমে গেছেবলে উপর থেকে দেখতে অনেকটা জলপ্রপাতের মতো মনে হয় ।
মরিশাসের সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কেন্দ
মরিশাসের সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র এর রাজধানী পোর্ট লুইস ।1736 সালে ফ্রেঞ্চ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি শহরটি গড়ে তোলেন। আধুনিক ব্যাস্ত নাগরিক হলেও এর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে ঔপনিবেশিক অতীতের চিহ্ন।
মরিশারের বসতি
ঘনবসতিপূর্ণ এই শহরে দেশের প্রায় 40 শতাংশ লোক বাস করে প্রথমে ওলন্দাজ তারপর ফরাসি এবং সবশেষে ইংরেজরা এখানে শাসন করায় প্রতিটি দেশেই এই শহরে তাদের ছাপ রেখে গেছে ফলে শহরটিতে মিশ্র সাংস্কৃতিক আগ্রহ বিরাজ করে ।
মরিশাসের মুদ্রার নাম
মরিশাসের মুদ্রার নাম মরিতিয়ান রুপী ।এক মরিশিয়ান রুপির মূল্য বাংলাদেশের 2 টাকার বেশি ।
পর্যটন ব্যবস্থা মরিশাস
মরিশাসের পর্যটন ব্যবস্থা খুবই জনপ্রিয় দেশটির সৌন্দর্য্যকে স্বর্গেরই প্রতিরূপ হিসেবে বর্ণনা করা হয় ।সমুদ্র সৈকতের সাদা বালি এবং ভারত মহাসাগরের স্বচ্ছ নীল জল বহু পর্যটক কে এই দ্বিপে টেনে আনে।
মধুচন্দ্রিমা মধুচন্দ্রিমার জন্য সেরা জায়গা গুলোর তালিকায় মরিশাস অন্যতম। মরিশাসের আরেকটি আকর্ষণ হলো সাত রঙা মাটি।চামারেল নামের এক গ্রামে বিস্ময়কর এই ভূমিরূপ দেখা যায়। মরিশাসের পর্যটন ব্যবস্থা দিনে দিনে অনেক উন্নত হয়েছে।
মরিশাস স্বাধীনতার পর 970 সালের দিকে দেশটিতে মাত্র 10 থেকে 20 হাজার পর্যটক আসত। আর বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় 10 থেকে 15 লক্ষ পর্যটক এই দিকে ঘুরতে আসেন ।
ছোট্ট একটি দ্বীপ দেশ হলেও অনেক বড় বড় বিমান সংস্থা মরিশাসে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করেন পৃথিবীর বহু দেশের নাগরিকদের মরিশাসে যেতে কোন ভিসার প্রয়োজন হয় না তবে বাংলাদেশীরা মরিশাসে ঘুরতে চাইলে আগে থেকে ভিসা নিতে হবে ।
মাদাগাস্কার দ্বীপ
মরিশাস থেকে 800 কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত মহাসাগর এর মাঝে অবস্থিত আরেকটি বিস্ময়কর দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কার। এই দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে অনেকটাই আলাদা ।
মাদাগাস্কার নিজস্ব সমৃদ্ধ বাস্তুসংস্থানের কারণে বিজ্ঞানীরা এই দ্বীপটিকে পৃথিবীর অষ্টম মহাদেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম দ্বীপ ।
আশা করি আপনারা এই পোস্ট থেকে অনেক কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন মরিশাস সম্পর্কে প্রতিনিয়ত এ ধরনের তথ্য পাওয়ার জন্য আপনারা এই ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন তাহলে আপনারা নতুন নতুন তথ্যমূলক পোস্ট পেয়ে যাবেন খুব সহজে।
এই পোস্টে মরিসাস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেয়া হয়েছে আশা করা যায় এগুলো অবশ্যই আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারা এখান থেকে তথ্য পেয়েছেন মরিচাস সম্পর্কে।
এই